আলোয় ফেরা
শঙখ শুভ্র নায়ক
ক্যাঁচ করে ব্রেক কষে গাড়িটা থামাল মানালি। গাড়ির সামনে হঠাৎ একটা লোক চলে এসেছিল। সামনের ইঞ্জিনে ধাক্কা লেগে মাটিতে পড়ে গেছে। হেড লাইটের আলোয় লোকটার বিভৎস মুখ খানা এক ঝলক দেখেই সে শিউরে উঠেছিল। যেন এক খানা কঙ্কাল তার বিভৎস মুখ নিয়ে গাড়ির সামনে লাফিয়ে পড়েছে। ওর হাত পা থর থর করে কাঁপছিল। ভাবছিল আজ থেকে কয়েকদিন আগে হয়তো ওকে দেখেও লোকে ঠিক এভাবেই শিউরে উঠত।
মেঘের ফাঁক দিয়ে সেদিন মাটির বুকে ছলকে ছলকে পড়ছিল রোদ। মাথায় ওড়না জড়িয়ে এভারগ্রিন রোডে একুশ নম্বর বাসের জন্য অপেক্ষা করছিল মানালি। হঠাৎ একটা বাইক এসে দাঁড়িয়েছিল ওর সামনে। বাইক আরোহীর মুখ হেলমেটে ঢাকা ছিল, আর পিছনের ছেলেটার মুখ রুমালে ঢাকা। ওর দিকে হিমশীতল দৃষ্টিতে তাকিয়ে পিছনের ছেলেটা একটা বোতল বার করে ছিল। তারপর একটা তরল পদার্থ ছুঁড়ে মেরেছিল ওর মুখে। চিৎকার করে মাটিতে আছড়ে পড়েছিল মানালি। অসহ্য যন্ত্রনায় ছটপট করতে করতে বুঝেছিল কেউ বা কারা ওকে তুলে হাস্পাতালে নিয়ে যাচ্ছে। প্রায় একমাস হাস্পাতালে পড়েছিল মানালি। এর মাঝখানে পুলিশ এসেছিল। বেশ কয়েকবার জিজ্ঞাসাবাদ করে গ্রেফতার করেছিল বিজয় নামে একটি ছেলেকে। কলেজ ইউনিউনের নেতা ছিল সে। ওর পিছনে লাগত। কয়েকবার ওকে ছোঁয়ার চেষ্টাও করেছে। সেসব সযত্নে এড়িয়ে গিয়েছে মানালি কিন্তু অরিত্রর সঙ্গে ওর সম্বন্ধ হবার পর থেকেই খানিকটা যেন পাগলা কুকুরের মতো হয়ে গিয়েছিল বিজয়, অবশেষে একটা সুযোগ পেতেই আক্রমণ শানিয়ে দেয়। মুখে ছুঁড়ে দেয় মিউরিয়েটিক এসিডের মতো বিষাক্ত কোনো এসিড।
হাস্পাতাল থেকে বেরিয়ে আসার পরে মানালি দেখেছিল ওর জীবনটা পুরো বদলে গেছে। অনেকেই ওকে সান্তনা দিতে আসছিল। ওর কলেজের কয়েকটা বান্ধবী একবার করে ওর সঙ্গে দেখা করেছিল। কিন্তু অরিত্র? যার জন্য সে বার বার বিজয়কে অগ্রাহ্য করেছে, তার কোনো দেখা পাওয়া যায়নি। একবার শুধু ফোন করে অরিত্র বলেছিল, "আমি লণ্ডনে চলে যাচ্ছি মানালি, তুমি আশা হারিওনা। আমি আবার ফিরে আসব।"
ফিরে পাওয়ার মতো কিছুই ছিলনা মানালির কাছে। সে জানত সামনের লড়াইটা বেশ কঠিন, একা একাই ওকে সেই লড়াই লড়তে হবে। অবশেষে থানা কোর্ট করে প্রায় দু'বছর দৌড়াদৌড়ি করার পরে কোর্ট বিজয় কে পাঁচ বছরের জেলের সাজা শোনায়। আর পারছিলনা মানালি। সে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। মিশরীয় সভ্যতার পিরামিডের ভিতরের অন্ধকারে শুয়ে থাকা এক খানা মমির মতো লাগত নিজেকে। তাই হায়ার কোর্টে এপ্লাই করার ইচ্ছে হয়নি। দেখতে দেখতে সময় কেটে যাচ্ছিল। সোসাল সাইটে সান্তনা দেওয়ার অনেক লোক পাচ্ছিল সে, তাদের মধ্যেই একজন শুভানুধ্যায়ী ওকে জানিয়েছিল লণ্ডনে গিয়ে অরিত্র নাকি বিয়ে করেছে। ওর চেয়ে বছর পনেরোর বড়ো একজন ডাক্টার কে। খারাপ লেগেছিল একটু, কিন্তু মুখ ফুটে সেকথা কাউকে জানায়নি মানালি। দেখতে দেখতে পাঁচ বছর কেটে গেল। সাড়ে চারবছর জেল খাটার পরে মুক্তি পেয়েছে বিজয়। ওর মুক্তির খবর পেপারে টিভিতে বেরিয়েছিল। বিছানায় শুয়ে শুয়ে মানালি ভাবছিল বিজয় হয়তো সাড়ে চারবছর শাস্তি পেল কিন্তু ওর তো সারা জীবনটাই নষ্ট করে দিয়ে গেল সে। যে যন্ত্রনায় প্রতি মুহূর্তে মানালি দগ্ধে যাচ্ছে সেই যন্ত্রনা কি এক মুহূর্তের জন্যও টের পেয়েছে বিজয়? হঠাতই ওর মোবাইলে একটা আননোন নম্বর থেকে কল এল। একসেপ্ট করবনা করবনা ভেবে ফোনটা একসেপ্ট করেই নিল মানালি। "হ্যালো", বলতেই ওপাশ থেকে একটা পুরুষালি কষ্ঠস্বর বলল, "হ্যালো মানালি, আমি অরিত্র বলছি, আমি কলকাতাতে ফিরেছি, তুমি প্লিজ আমার সঙ্গে একবার দেখা করতে পারবে?"
মানালি থমকে গেল। এতদিন পরে ওর খবর নেওয়ার সময় হল অরিত্রর? তাউ নিজে ওর বাড়িতে আসতে পারছেনা, ওকে যেতে বলছে? ভীষণ রাগ হল মানালির। বলল, "না, আমি যেতে পারবনা।"
অরিত্র বলল, "প্লিজ, কাল একবার লিংকন এপার্টমেন্টে এসে দেখা করো। অনেক কষ্ট করে তোমার প্রবলেমের রিমেডি আমি জোগাড় করে এনেছি।"
মানালি অবাক হল। বলল, "আমার কোন প্রবলেমের রিমেডি তুমি জোগাড় করেছ?"
অরিত্র বলল, "এলেই দেখতে পাবে।"
ফিরে পাওয়ার মতো কিছুই ছিলনা মানালির কাছে। সে জানত সামনের লড়াইটা বেশ কঠিন, একা একাই ওকে সেই লড়াই লড়তে হবে। অবশেষে থানা কোর্ট করে প্রায় দু'বছর দৌড়াদৌড়ি করার পরে কোর্ট বিজয় কে পাঁচ বছরের জেলের সাজা শোনায়। আর পারছিলনা মানালি। সে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। মিশরীয় সভ্যতার পিরামিডের ভিতরের অন্ধকারে শুয়ে থাকা এক খানা মমির মতো লাগত নিজেকে। তাই হায়ার কোর্টে এপ্লাই করার ইচ্ছে হয়নি। দেখতে দেখতে সময় কেটে যাচ্ছিল। সোসাল সাইটে সান্তনা দেওয়ার অনেক লোক পাচ্ছিল সে, তাদের মধ্যেই একজন শুভানুধ্যায়ী ওকে জানিয়েছিল লণ্ডনে গিয়ে অরিত্র নাকি বিয়ে করেছে। ওর চেয়ে বছর পনেরোর বড়ো একজন ডাক্টার কে। খারাপ লেগেছিল একটু, কিন্তু মুখ ফুটে সেকথা কাউকে জানায়নি মানালি। দেখতে দেখতে পাঁচ বছর কেটে গেল। সাড়ে চারবছর জেল খাটার পরে মুক্তি পেয়েছে বিজয়। ওর মুক্তির খবর পেপারে টিভিতে বেরিয়েছিল। বিছানায় শুয়ে শুয়ে মানালি ভাবছিল বিজয় হয়তো সাড়ে চারবছর শাস্তি পেল কিন্তু ওর তো সারা জীবনটাই নষ্ট করে দিয়ে গেল সে। যে যন্ত্রনায় প্রতি মুহূর্তে মানালি দগ্ধে যাচ্ছে সেই যন্ত্রনা কি এক মুহূর্তের জন্যও টের পেয়েছে বিজয়? হঠাতই ওর মোবাইলে একটা আননোন নম্বর থেকে কল এল। একসেপ্ট করবনা করবনা ভেবে ফোনটা একসেপ্ট করেই নিল মানালি। "হ্যালো", বলতেই ওপাশ থেকে একটা পুরুষালি কষ্ঠস্বর বলল, "হ্যালো মানালি, আমি অরিত্র বলছি, আমি কলকাতাতে ফিরেছি, তুমি প্লিজ আমার সঙ্গে একবার দেখা করতে পারবে?"
মানালি থমকে গেল। এতদিন পরে ওর খবর নেওয়ার সময় হল অরিত্রর? তাউ নিজে ওর বাড়িতে আসতে পারছেনা, ওকে যেতে বলছে? ভীষণ রাগ হল মানালির। বলল, "না, আমি যেতে পারবনা।"
অরিত্র বলল, "প্লিজ, কাল একবার লিংকন এপার্টমেন্টে এসে দেখা করো। অনেক কষ্ট করে তোমার প্রবলেমের রিমেডি আমি জোগাড় করে এনেছি।"
মানালি অবাক হল। বলল, "আমার কোন প্রবলেমের রিমেডি তুমি জোগাড় করেছ?"
অরিত্র বলল, "এলেই দেখতে পাবে।"
পরদিন সকালে খানিকটা দোনামনা করে লিংকন এপার্টমেন্টে চলে গেল মানালি। মেনলি বিদেশীদের থাকার জন্যই এই এপার্টমেন্ট টা বানানো হয়েছে। অরিত্র এখানে কেন উঠেছে কে জানে? দরজার কাছে গিয়ে কলিংবেল টিপতেই ভিতর থেকে এক ভদ্রমহিলার কষ্টস্বর শুনতে পেল। স্পষ্ট ইংরেজিতে উনি বললেন, "দরজা খোলা আছে, ভিতরে ঢুকে পড়ুন।"
দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকল মানালি। সামনেই এক ভদ্রমহিলা কে দেখে চমকে উঠল। ভদ্রমহিলা বিদেশী। পঁয়তাল্লিশের মতো বয়স। শীর্ণকায় শরীর। একটা চেয়ারের উপরে ভদ্রমহিলা বসে আছেন। এঁর ছবি পেপারে বেশ কয়েকবার দেখেছে মানালি। ভদ্রমহিলা নাম এনা হার্টওয়ে। ইংলন্ডের বিখ্যাত এক প্লাস্টিক সার্জেন। টিসু কালচার নিয়ে ওনার গবেষনা বিশ্ববিখ্যাত। উনি দীর্ঘদিন কিছু একটা গোপন গবেষনায় যুক্ত ছিলেন। বাথরুমের ভিতর থেকে বেরিয়ে আসতে আসতে অরিত্র বলল, "তুমি এসেছ?"
মানালি বলল, "হ্যাঁ, এসেছি, কেন ডেকেছিলে বলো?"
অরিত্র বলল, "কেন ডেকেছি সেটা ম্যাডাম তোমাকে বলবেন।"
মাথা নেড়ে এনার দিকে তাকাল মানালি। এনা বললেন, "সাত বছর আগে তোমার বন্ধু আমার কাছে এসেছিল এসিডে ৯৯% পোড়া একটা ফেসকে কিভাবে আবার আগের মতো নিঁখুত বানানো যায় সেই আর্জি নিয়ে। আমি ওকে বার বার ফিরিয়ে দিই, কিন্তু শেষে আর পারিনি। তোমার বন্ধুর আর্জি মেনে গত পাঁচ বছর ধরে ডিএনএ চেঞ্জ নিয়ে গবেষণা করেছি, এবং অবশেষে এমন একটা আবিষ্কার করেছি, যার ফলে তোমার ফেসটাকে আবার আগের মতো বানানো যাবে?"
অবাক ভাবে অরিত্রর দিকে তাকাল মানালি। বলল, "আমি আবার আগের মতো দেখতে হয়ে যাব?"
এনা বললেন, "না, পুরোপুরি আগের মতো হবেনা, তবে দেখতে খারাপ লাগবেনা তোমাকে।"
মানালি বলল, "কিন্তু কিভাবে? আমি আজ পর্যন্ত যতজন প্লাস্টিক সার্জেনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি প্রত্যেকে আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছে।"
এনা বললেন, "প্রশেষটা একটু জটিল। কিন্তু অসম্ভব নয়। তোমার সেম ব্লাডগ্রুপের কোনো একজন জীবিত মানুষের মুখের চামড়া জোগাড় করতে হবে তোমাকে, যেটা কালচার করে আমি ডিএনএ চেঞ্জ করে তোমার মুখের সঙ্গে সেট করে দিতে পারব।"
হতাস ভাবে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল মানালি। বলল, "আমার সেম ব্লাডগ্রুপের কোনো একজন জীবিত মানুষ তার মুখের চামড়া আমাকে দেবে কেন?"
অরিত্র বলল, "দেবেনা, কিন্তু ছিনিয়ে নিতে হবে।"
মানালি ভ্যাবাচ্যাকা খেল। বলল, "মানে?"
ফিসফিস করে অরিত্র বলল, "ওটাই তো সাসপেন্স।"
দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকল মানালি। সামনেই এক ভদ্রমহিলা কে দেখে চমকে উঠল। ভদ্রমহিলা বিদেশী। পঁয়তাল্লিশের মতো বয়স। শীর্ণকায় শরীর। একটা চেয়ারের উপরে ভদ্রমহিলা বসে আছেন। এঁর ছবি পেপারে বেশ কয়েকবার দেখেছে মানালি। ভদ্রমহিলা নাম এনা হার্টওয়ে। ইংলন্ডের বিখ্যাত এক প্লাস্টিক সার্জেন। টিসু কালচার নিয়ে ওনার গবেষনা বিশ্ববিখ্যাত। উনি দীর্ঘদিন কিছু একটা গোপন গবেষনায় যুক্ত ছিলেন। বাথরুমের ভিতর থেকে বেরিয়ে আসতে আসতে অরিত্র বলল, "তুমি এসেছ?"
মানালি বলল, "হ্যাঁ, এসেছি, কেন ডেকেছিলে বলো?"
অরিত্র বলল, "কেন ডেকেছি সেটা ম্যাডাম তোমাকে বলবেন।"
মাথা নেড়ে এনার দিকে তাকাল মানালি। এনা বললেন, "সাত বছর আগে তোমার বন্ধু আমার কাছে এসেছিল এসিডে ৯৯% পোড়া একটা ফেসকে কিভাবে আবার আগের মতো নিঁখুত বানানো যায় সেই আর্জি নিয়ে। আমি ওকে বার বার ফিরিয়ে দিই, কিন্তু শেষে আর পারিনি। তোমার বন্ধুর আর্জি মেনে গত পাঁচ বছর ধরে ডিএনএ চেঞ্জ নিয়ে গবেষণা করেছি, এবং অবশেষে এমন একটা আবিষ্কার করেছি, যার ফলে তোমার ফেসটাকে আবার আগের মতো বানানো যাবে?"
অবাক ভাবে অরিত্রর দিকে তাকাল মানালি। বলল, "আমি আবার আগের মতো দেখতে হয়ে যাব?"
এনা বললেন, "না, পুরোপুরি আগের মতো হবেনা, তবে দেখতে খারাপ লাগবেনা তোমাকে।"
মানালি বলল, "কিন্তু কিভাবে? আমি আজ পর্যন্ত যতজন প্লাস্টিক সার্জেনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি প্রত্যেকে আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছে।"
এনা বললেন, "প্রশেষটা একটু জটিল। কিন্তু অসম্ভব নয়। তোমার সেম ব্লাডগ্রুপের কোনো একজন জীবিত মানুষের মুখের চামড়া জোগাড় করতে হবে তোমাকে, যেটা কালচার করে আমি ডিএনএ চেঞ্জ করে তোমার মুখের সঙ্গে সেট করে দিতে পারব।"
হতাস ভাবে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল মানালি। বলল, "আমার সেম ব্লাডগ্রুপের কোনো একজন জীবিত মানুষ তার মুখের চামড়া আমাকে দেবে কেন?"
অরিত্র বলল, "দেবেনা, কিন্তু ছিনিয়ে নিতে হবে।"
মানালি ভ্যাবাচ্যাকা খেল। বলল, "মানে?"
ফিসফিস করে অরিত্র বলল, "ওটাই তো সাসপেন্স।"
গত সাতদিন হল অপারেশন হয়েছে মানালির। দেখতে সে অনেকটাই পালটে গেছে। কিন্তু অনেক সুন্দরী হয়েছে দেখতে। ওর মুখের সঙ্গে ম্যাচিং কোনো মেয়ের চামড়া পাওয়া যায়নি, একখানা পুরুষের চামড়াকে কালচার করে মুখে সেট করতে হয়েছে। তাতে অবশ্য মুখের কোমলতা একটুও হ্রাস পায়নি। যেটুকু কাঠিন্য আছে সেটুকু কিছুদিন গেলেই ঠিক হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন এনা। অবশ্য এই চামড়া জোগাড়ের কাজটা সহজ হয়নি, একজন লোককে ইনজেকশন দিয়ে অজ্ঞান করে নিয়ে আসা হয়েছিল এনার কাছে। উনি সযত্নে তার মুখের চামড়াটা তুলে নিয়ে কালচার করে মানালির মুখে সেট করে দিয়েছেন, এবং ফিরে গেছেন ইংলন্ডে। কাজটা করার পরে খানিকটা অপরাধ বোধে ভুগছিলেন উনি, অরিত্র বুঝিয়ে সুঝিয়ে ওনাকে ঠিক করেছে। তবে এনার সঙ্গে আর ইংলন্ডে ফিরে যায়নি অরিত্র, সে থেকে গেছে এদেশেই। মানালি ওকে মেনে নিয়েছে।
বেশ কয়েকটা দিন অরিত্রর সঙ্গে কাটিয়ে আজ আবার বাড়ি ফিরছিল মানালি, ফেরার পথেই এক্সিডেন্টটা হল। এখোনো হাত দুটো থর থর করে কাঁপছে মানালির। এটাই সেই লোক, যার মুখের চামড়া তুলে মানালির মুখে সাঁটা হয়েছিল। লোকটা অন্যকেউ নয়, বিজয়। যে একদিন ওর মুখে এসিড ছুঁড়ে মেরেছিল। মানালি চিৎকার করল, "আপনি ঠিক আছেন তো?"
গাড়ির সামনে থেকে গা ঝাড়তে ঝাড়তে বিজয় উঠে এল। এক্সিডেন্টে ওর কোনো ক্ষতি হয়নি। বলল, "গাড়ি থামালেন কেন ম্যাডাম? চালিয়ে দিয়ে আমাকে মেরে ফেলতে পারলেন না? এই যন্ত্রনা নিয়ে আমি যে আর বেঁচে থাকতে পারছিনা।"
মানালি হাসল। বলল, "মরে গেলে তো তুমি তোমার অপরাধের সঠিক সাজা পেতেনা। তুমি সারা জীবন ধরে দগ্ধাবে, কিন্তু মরতে পারবেনা, এই তোমার অপরাধের উপযুক্ত শাস্তি।"
বিজয় চিৎকার করে উঠল, "কে? কে আপনি?"
গাড়ির সামনে থেকে গা ঝাড়তে ঝাড়তে বিজয় উঠে এল। এক্সিডেন্টে ওর কোনো ক্ষতি হয়নি। বলল, "গাড়ি থামালেন কেন ম্যাডাম? চালিয়ে দিয়ে আমাকে মেরে ফেলতে পারলেন না? এই যন্ত্রনা নিয়ে আমি যে আর বেঁচে থাকতে পারছিনা।"
মানালি হাসল। বলল, "মরে গেলে তো তুমি তোমার অপরাধের সঠিক সাজা পেতেনা। তুমি সারা জীবন ধরে দগ্ধাবে, কিন্তু মরতে পারবেনা, এই তোমার অপরাধের উপযুক্ত শাস্তি।"
বিজয় চিৎকার করে উঠল, "কে? কে আপনি?"
উত্তর না দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দিল মানালি। এক্ষুনি ওকে বাড়ি ফিরতে হবে। অনেকদিন ওর মা বাবা ওর মুখ দেখেনি। এতদিন নিজেকে অন্ধকারের কোনো এক বিভৎস জীব মনেহত মানালির, যার মুখের দিকে তাকালেই মা বাবার মুখে নিরাশা ফুটে উঠতে দেখত, আজ সে আবার আলোয় ফিরতে পেরেছে। এবারে হয়তো এক চিলতে হাসি ফুটে উঠতে দেখবে তাদের মুখে।
(সমাপ্ত)

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন